দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে যশোরে। জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পৌঁছেছে বিভাগের শীর্ষে।
এ জেলায় ৩০ জন করোনা রোগীর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক রয়েছেন ১০ জন। ৪৬ দিন আগে অর্থাৎ গত ১০ মার্চ খুলনা বিভাগের প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়া চুয়াডাঙ্গার সেই ইতালিফেরত যুবক সুস্থ হয়েছেন। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৮ জনে সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে যশোরে প্রতিদিনই একাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পাশাপাশি দ্রুত সংখ্যা বাড়তে থাকায় করনোর হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত ১০ মার্চ ইতালিফেরত এক যুবক আক্রান্তের মধ্য দিয়ে খুলনা বিভাগে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায়। গত ১২ এপ্রিল যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার একজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের মধ্য দিয়ে এ জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। পরবর্তীসময়ে ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে পাশ্ববর্তী উপজেলা কেশবপুরে শ্বশুরবাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এতে তার সংস্পর্শে আসা শ্যালক করোনা আক্রান্ত হন। পরে ২৬ এপ্রিল কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন স্বাস্থ্য কর্মী এবং উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের এক নারীর করোনা শনাক্ত হয়।
গত তিনদিনের ব্যবধানে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারজন স্বাস্থ্যকর্মী, মোবারকপুর গ্রামের ও বামনআলী গ্রামের দুই নারী করোনা শনাক্ত হয়।
২৪ এপ্রিল যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠিতে আশুলিয়া ফেরত এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়। তবে দু’দিনের ব্যবধানে ওই ব্যক্তির ছেলের করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়াও উপশহর ও খড়কি এলাকায় একজন করে, লেবুতলা ইউনিয়নে তিনজন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন দু’জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এছাড়াও গত ২২ এপ্রিল চৌগাছা উপজেলার এক প্রসূতি নারী ও এক কিশোরের করোনা শনাক্ত হয়। দু’দিনের ব্যবধানে ওই নারীর স্বামী এবং শনাক্ত কিশোরের চিকিৎসা দেওয়া এক চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হয়।
এছাড়াও শার্শার একজন স্বাস্থ্যকর্মী ও বেনাপোল ইমিগ্রেশনের একজন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত হয়। বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে গত কয়েকদিনে যশোর জেলায় শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, বিভাগের মধ্যে যশোর জেলাতেই সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে জনগণ সচেতন হয়ে ঘরে থাকলে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এজন্য তিনি সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুলনার বিভাগীয় উপ-পরিচালক ডা. শামীম আরা নাজনীন বলেন, গতকাল পর্যন্ত (২৫ এপ্রিল) খুলনা বিভাগে ৪৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। জেলাওয়ারি হিসেবে যশোরে তুলনামূলক বেশি শনাক্ত হয়েছে। তবে যতদিন যাচ্ছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেই রোগী।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
দৈনিক প্রত্যয়/ জাতীয়/ জাহিরুল মিলন